মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৫০ অপরাহ্ন
ইসরাত জাহান, চট্টগ্রাম থেকে ॥
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার রৌপবাদ বাগদাদ হোটেলের পেছনের রেলবীট এলাকায় গড়ে উঠেছে ভয়াবহ এক মাদক সাম্রাজ্য। এলাকার অধিবাসীরা বলছেন, এ অঞ্চল এখন মাদক সম্রাট সিরাজ এর নিয়ন্ত্রণে। সিরাজের নেতৃত্বে প্রতিদিন গাঁজা, ইয়াবা, আইসসহ বিভিন্ন নেশাজাত দ্রব্যের খুচরা ও পাইকারি বিক্রি চলে প্রকাশ্যে। স্কুলপড়ুয়া কিশোর ও বেকার যুবক অনেকে আজ তার গঠিত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিরাজের রয়েছে ২০ থেকে ২৫ জন খুচরা বিক্রেতা, যারা রেললাইন সংলগ্ন কলোনি, বস্তি ও অন্ধকার গলিতে প্রতিদিন মাদক বিক্রি করে। তাদের দেখভাল করেন সিরাজের সহযোগী কামাল, যিনি মাদক সরবরাহ থেকে টাকার লেনদেন সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। সিরাজ ও কামাল এক সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এই নেটওয়ার্ক পরিচালনা করছেন। তবে এলাকাবাসীর ক্ষোভ সিরাজের এই বেপরোয়া কর্মকান্ডের পেছনে রয়েছে কিছু অসৎ পুলিশ সদস্যের প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সিরাজ প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ মাসোহারা দিয়ে থাকেন পুলিশের একাংশকে।
সেই টাকা তোলেন পুলিশের তথাকথিত সোর্স কামাল। সিরাজ নাকি প্রকাশ্যে বলেন, পুলিশের মাসোহারা যদি সোর্স কামালের মাধ্যমে না পাঠাই, তাহলে মাদক বিক্রি বন্ধ করে দেয়। অবাক করার বিষয়, এলাকাবাসীর কাছে এখন দুইজন কামাল, একজন সিরাজের সহযোগী ও অপরজন পুলিশের সোর্স দুজনের ভূমিকাই রহস্যে ঘেরা। কে আসল কারবারি, আর কে ‘সোর্স’ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে সাধারণ মানুষ। রৌপবাদ এলাকার বাসিন্দারা বলেন, “ রেলবীট এখন আতঙ্কের এলাকা। সন্ধ্যা নামলেই গলিতে গলিতে মাদকসেবীদের আনাগোনা, অশান্ত পরিবেশ। স্কুলছাত্রদের মধ্যে আসক্তি বাড়ছে, আর পরিবারগুলো ভয়ে মুখ বন্ধ করে আছে।
স্থানীয় সমাজকর্মী ও অভিভাবকরা প্রশাসনের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের দাবি, যদি এখনই কঠোর অভিযান না হয়, রৌপবাদ পুরোপুরি মাদকপল্লিতে পরিণত হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, মাদকের বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ ছাড় পাবে না। তবে এলাকাবাসীর প্রশ অভিযোগের পরও অভিযান কবে? রৌপবাদবাসীর একটাই দাবি মাদক সম্রাট সিরাজ, সহযোগী কামাল ও পুলিশ সোর্স কামালের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ, আর রৌপবাদে শান্তি ফেরানোর উদ্যোগ এখনই চাই।